মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণগুলি আলোচনা করো। Mojo Education bengali

 মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণগুলি আলোচনা করো। Mojo Education bengali


উত্তর। আনুমানিক ২৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পুষ্যমিত্র শৃঙ্গ শেষ মৌর্যসম্রাট বৃহদ্রথকে এবার গ্রো করে শুভা শাসনের প্রবর্তন করলে ভারতে মৌর্যশাসনের অবসান ঘটে। ঐতিহাসিকেরা তা ভারতের প্রথম বৃহত্তম মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণগুলিকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে ■। যথা করেছেন। মৌর্য শাসকদের ব্যক্তিগত ত্রুটি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট, বিদেশি জয়গাঁর অনুপ্রবেশ ইত্যাদি নানা কারণকে তাঁরা মৌর্য সাম্রাজ্যের ক্রমিক অবক্ষয় ও চূড়ান্ত


 (১) ব্রাহ্মণশ্রেণির বিদ্রোহ: পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে, মৌর্যশাসনের প্রতি রিগ রগুণশ্রেণির ক্ষোভ এবং তজ্জনিত বিপ্লবই ছিল এই শাসনের পতনের অন্যতম প্রধান কর হরণ। তাঁর মতে, অশোক কর্তৃক পশুবলি নিষিদ্ধ হওয়ার ফলে ব্রাহ্মণদের যাগযজ্ঞ গুরুত্ব ও গাম্ভীর্য হারিয়েছিল; 'ব্যবহার-সমতা' ও 'দন্ড-সমতা' প্রবর্তনের ফলে ব্রাহ্মণরা অতীতের প্রজার আইনশাত সুযোগসুবিধা হারিয়েছিলেন এবং 'ধর্মমহামাত্র' নামক কর্মচারীরা অশোকের জন অ' প্রচার করে ব্রাহ্মণ্যধর্মের প্রভাব-প্রতিপত্তি হ্রাস করেছিল। তাই ব্রাহ্মণরা শূদ্রাসনের জসানের জন্য পৃষ্যমিত্রের বিদ্রোহে শামিল হয়েছিলেন।


ভাতে আরো কিছু ড. এইচ. সি. রায়চৌধুরি পণ্ডিত শাস্ত্রীর যুক্তিগুলিকে অস্বীকার করেছেন। তাঁর নয়, অশোকের পশুবলি নিষিদ্ধ আইন ব্রাহ্মণদের ক্ষতি করেনি। কারণ এই আইনটি এলো যাগেও প্রচলিত ছিল। তা ছাড়া, 'শ্রুতি সাহিত্য' থেকে জানা যায়, ব্রাহ্মণ-সম্প্রদায়ও ধীরে ভরে ধর অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী হয়েছিলেন। ব্যবহার-সমতা বা দন্ড-সমতাও ব্রাহ্মণদের এন৭ৎ করেনি। কারণ এই আইনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল রাজুকদের বিচারক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণে এমন হয়। তা ছাড়া কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র' থেকে জানা যায়, রাজবিদ্রোহের অপরাধে ব্রাহ্মণদেরও এই সীদও গ্রহণ করতে হবে-অশোক এই নীতির প্রবর্তক নয়। ধর্মমহামার প্রসলোজি বলচৌধুরির অভিমত হল-এই শ্রেণির কর্মচারীদের 'ধর্ম' প্রচারই একমাত্র কাজ ছিল দিতে হতেন-এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই এদের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণদের ক্ষোভের যুক্তি কোরা এর শাসমতিয়ান্ত হল এই শ্রেনির তা ছাড়া, এঁরা কেবল অব্রাহ্মণদের মধ্য মুেক্তি দিন যায়নি। অশোকের মৃত্যুর পর ব্রাহ্মণরা তাঁর উত্তরাধিকারীদের বিরোধি করেছিলেন- পন্ডিত শাস্ত্রীর এই যুক্তিও ড. রায়চৌধুরী অস্বীকার করেছেন। তাঁর মতে, রাজতরঙ্গিনী থেকে পরিষ্কার জানা যায়, মৌর্যরাজ জলৌকার সাথে ব্রাহ্মণদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।


(২) সাংগঠনিক ত্রুটি: মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল সাংগঠনিক দুর্বলতা। রাজা ছিলেন সমস্ত ক্ষমতার আধার, প্রজাদের আনুগত্য ছিল দুর্বলতা তা রাজার আমলাতন্ত্র এই ত্রুটিকে আরও প্রকট করে তুলেছিল। রাজা পরিবর্তনের সাথে সাথে আমেলা থেকে গ্রামস্তর পর্যন্ত কর্মচারীর পরিবর্তন ঘটাতেন। ফলে শাসনক্ষমতা একটু সামাজও গোষ্ঠীর কুক্ষিগত হয়ে পড়েছিল। আবার আঞ্চলিক প্রশাসনে স্থানীয় লোকেদের নিযুক্তির ফলে স্থানীয় দলাদলি ব্যাপক হয়ে পড়েছিল। অথচ যোগাযোগের অপ্রতুলতাহের কেন্দ্রে আসীন রাজার পক্ষে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হত না। ব্যক্তিগতভাবে


অতি-কেন্দ্রীকরণঃ ঐতিহাসিক রোমিলা থাপার মনে করেন যে, মৌর্য শাসনব্যবসাদ অতি-কেন্দ্রীকরণ প্রবণতা সাম্রাজ্যের ভিত্তিকে সুদৃঢ় হতে দেয়নি। রাজা এক অতি-উচ্চাসনে থেকে তাঁর চূড়ান্ত কর্তৃত্ব ভোগ করতেন। প্রজাসাধারণের ইচ্ছা-অনিচ্ছার কোনো স মৌর্য রাজনীতিতে ছিল না। এইভাবে প্রজাসাধারণের উদাসীনতা কার্যত মৌর্য সাম্রাজ্যরে দুর্বল করে পতন ত্বরান্বিত করেছিল।


(৪) অমাত্যদের অত্যাচার: মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের জন্য প্রদেশগুলির অমাত্যমে অত্যাচার বহুলাংশে দায়ী ছিল। ড. রায়চৌধুরির মতে, দূরবর্তী প্রদেশসমূহের অমাত্যমে। অত্যাচারে বিন্দুসার ও অশোকের আমলে তক্ষশিলায় দুবার বিদ্রোহ ঘটেছিল। অমাত্যনে এই অত্যাচারের কাহিনি অশোকের 'কলিঙ্গ' লেখতে সমর্থিত হয়েছে। এই অতাছা কলিঙ্গ এবং উজ্জয়িনীতেও ছড়িয়ে পড়েছিল এইরূপ কুশাসনের ফলে মৌর্যশাসনের প্রা সাধারণ মানুষের আনুগত্য হ্রাস পেয়েছিল। অবশ্য রোমিলা থাপার এই যুক্তিকে অনিয় গুরুত্ব দিতে রাজি নন। তাঁর মতে, যে বৌদ্ধ গ্রন্থ 'দিব্যাবদানন্দ'-এর ওপর নির্ভর হা অমাত্যদের অত্যাচারের কাহিনি প্রচারিত, তা নির্ভরযোগ্য নয়।


(৫) অর্থনৈতিক দুরবস্থা: অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি মৌর্যশাসনের পতনায় ত্বরান্বিত করেছিল বলে অনেকের ধারণা। ডি. ডি. কোশাম্বী ও রোমিলা থাপার প্রমুখ মতে, বিরাট সেনাবাহিনী, বহুসংখ্যক কর্মচারী ও নিত্যনতুন অঞ্চলে শাসনবিস্তারের জা মৌর্য রাজকোশের ওপর ভীষণ চাপ পড়েছিল। এর জন্য গণিকাদের ওপরেও য চাপাতে হয়েছিল। তা ছাড়া, ওই সময়কার মুদ্রায় খাদের পরিমাণ বৃদ্ধিও ভেঙে তি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রমাণ বহন করে। গাঙ্গেয় উপত্যকায় কৃষি-সম্প্রসারণ ঘাঁটা ক সারা রাজ্যে তা ছিল না। ফলে কর-ব্যবস্থায়ও বৈষম্য ছিল। এই বৈষম্য অর্থনৈীি অল ভারসাম্য বিনষ্ট করেছিল।




Post a Comment

Previous Post Next Post